প্রকাশিত: ২৭/১১/২০১৭ ২:৫৮ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১০:২৮ এএম

চীপ রিপোর্টার,উখিয়া নিউজ ডটকম::
প্রাণঘাতি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ২৫হাজার রোহিঙ্গা শিশু। অজ্ঞতা, অপরিকল্পিত থাকা,খাওয়া,পরিবেশ ও অপরিচ্ছন্নতার কারনে বয়োবৃদ্ধ রোহিঙ্গার পাশাপাশি শিশুরাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ইউনিসেফের তথ্য মতে, চলমান ‘পুষ্টি সপ্তাহে’ প্রায় ২৫হাজার শিশু প্রাণঘাতি অপুষ্টিতে ভূগছে। যাহা চলতি বছরের মে মাসের জরীপের তুলনায় দ্বিগুণ বলে সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন। মিয়ানমার সামরিক জান্তার জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা উখিয়া-টেকনাফের ১২টি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে বর্তমানে বসবাস করছে।

সরজমিন উখিয়ার কুতুপালং,বালুখালী,থাইংখালী, ময়নার ঘোনা ও শফিউল্øাহ কাটা রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প ঘুরে ক্যাম্প ভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, মা’য়েরা অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছে। কুতুপালং ক্লিনিকে কর্তব্যরত ডাঃ অজিত বড়–য়া জানান, এসব অসুস্থ রোহিঙ্গা শিশুরা প্রসব পরবর্তী থেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর কারণ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে থাকা কালীন সময়ে কোন সুচিকিৎসা পায়নি। এখানে এসেও অপরিকল্পিত বসবাস, নোংরা বাসি খাবার, অপরিচ্ছন্ন বসবাস, সর্বোপুরি পরিবেশগত কারনে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘পুষ্টি সপ্তাহ’ উদ্ভোধনের লক্ষ্যে ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহেদ মালেক উখিয়ার বালুখালী শরনার্থী ক্যাম্পে আসেন। এসময় তিনি প্রত্যক্ষ ভাবে রোহিঙ্গাদের থাকা,খাওয়া ও পরিবেশ ঘুরে দেখেন। পরে পুষ্টি সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ৬লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আড়াই লাখ শিশু রয়েছে। তৎমধ্যে অধিকাংশ শিশু পুষ্টিহীনতা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব শিশুদের সুস্থ করে তুলতে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট ফারিয়া সেলিমের সাথে পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়ে আলাপ করা হলে তিনি জানান, গত মে মাসের উখিয়া-টেকানাফে নিবন্ধিত ক্যাম্প, অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র, নতুন রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্রের পুষ্টি সপ্তাহ পালিত হয়। এ সময় জরীপে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৭হাজার শিশু পুষ্টিহীনতায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। চলতি মাসের নভেম্বর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিশু জরীপে উঠে এসেছে ৭দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু মারাত্মক প্রাণঘাতি পুষ্টিহীনতার শিকার হয়ে দিন যাপন করছে। এসব শিশুদের অপুষ্টিহীনতার দুরীকরণের লক্ষ্যে ইউনিসেফে ও স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে ৭০টি দলের ৫৬০ স্বাস্থ্যকর্মী ৭০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া পুষ্টি সপ্তাহ আজ (রবিবার) শেষ হচ্ছে এ ১১দিন ব্যাপী চলমান কর্মসূচীতে ৬ থেকে ৫৯মাস বয়সী ১লাখ ৭৬হাজার ৭৫৬জন রোহিঙ্গা শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসূল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এ পর্যন্ত ১ লাখ ১০হাজার ৮২১জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিহীনতা সহ নানান রোগ দুরীকরণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য প্রদান করা হয়েছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমদ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত বেশির শিশু পুষ্টিহীনতা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের নিয়ন্ত্রণে সরকারি ১১টি ও বেসরকারি ৭৬টি মেডিকেল ক্যাম্পে শিশুদের পুষ্টিহীনতা দুরীকরণের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া জানান, টেকনাফে সরকারি ৬টি ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা পরিচালিত ২০টি মেডিকেল সেন্টার শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য কাজ করছে।

পাঠকের মতামত

মা ও মেয়ের একসঙ্গে এসএসসি পাস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য নুরুন্নাহার বেগম ৪৪ ...

আরাকান বিদ্রোহীর গুলিতে বাংলাদেশী যুবকের মৃ’ত্যু

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের গুলিতে এক বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের ...